বৃক্ষ মানুষরে পরম বন্ধু। বিপুল মানুষের পদভারে প্রতিদিন সুজলা সুফলা পৃথিবী বৃক্ষশূন্য হচ্ছে। মানুষরে নিজ প্রয়োজনে অবাধ ও নির্বিচারে চলছে বৃক্ষ নিধন। ফলে জীববৈচিত্র্য লোপ পাওয়ার সাথে সাথে পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা বাড়ছে। এমন মহাবিপর্যয় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক বনায়ন একান্ত দরকার।
সামাজকি বনায়ন:
বনায়ন হলো বন তৈরি বা এক সারি গাছ লাগানো যখোনে পূবে কখনো গাছ ছিল না। সামাজকি বনায়ন জনসাধারণ, বশিষে করে পলীর জনগণ এবং দারদ্রিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষরে অর্থনতৈকি, বাস্তুসংস্থানকি ও সামাজকি সুবধিা নশ্চিতি করার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে পরচিালতি বনায়ন। সামাজকি বনায়নরে লক্ষ্য কবেল 'গাছ নয়, গ্রামরে দরদ্রি জনগোষ্ঠীও'।
বনায়ন পরকিল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা, বনজ সম্পদরে নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, লভ্যাংশ বণ্টন ও পুনঃবনায়ন সব কাজইে তারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে।
সামজকি বন বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন: (ক) কমিউনিটি ফরস্টে (খ) গ্রামীণ বন (গ) অংশীদারিত্বরে বন (ঘ) গ্রামীণ উন্নয়নের বন বা স্বনির্ভর বন ইত্যাদি।
জাতীয় বন কমশিন ১৯৭৬ সালে সামাজকি বনায়ন শব্দটি ব্যবহার করেছিল। কমশিনরে মূল লক্ষ্য ছিল শহুরে বসতিগুলির আশেপাশের জমি ব্যবহার করা, যা মানুষের কার্যকলাপের কারণে উজাড় হয়ে গেছে। সরকার ২০০০ সালে সামজিক বনায়ন কার্যক্রমকে ১৯২৭ সালরে বন আইনরে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আইনি কাঠামোতে নিয়ে আসে। সামাজিক বনায়নকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সরকার ২০০৪ সালে সামাজিক বনায়ন বিধিমালা প্রর্বতন করে।
ভূমিহীন, দরিদ্র, বিধবা ও দুর্দশাগ্রস্ত গ্রামীণ জনগণের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করাই সামাজিক বনায়নের প্রধান লক্ষ্য।
পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের স্বনির্ভর হতে সহায়তা করা এবং তাদের খাদ্য, পশুখাদ্য, জ্বালানি, আসবাবপত্র ও মূলধনের চাহিদা পূরণ করা।
নার্সারি সৃজন, প্রান্তিক ও পতিত ভূমিতে বৃক্ষরোপণ করে বনজ সম্পদ সৃষ্টি, মরুময়তারোধ, ক্ষয়িষ্ণু বনাঞ্চল রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধি, পরিবেশ উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, নারীর ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং সর্বোপরি কর্মসংস্থান ও দারিদ্র নিরসনে সামাজিক বনায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে
সামাজিক বনের বৈশিষ্ট্য:
> স্থানীয় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বনায়ন কর্মসূচি পরিচালনা
> উপকারভোগী জনসাধারণের সংঘবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ
> এ বনায়নের মাধ্যমে উপকারভোগী জনগণের জ্বালানি, পশুখাদ্য ও কাঠের চাহিদা পূরণ
> এ বনায়ন কর্মসূচি গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে এবং দারিদ্রমোচনে সহায়করণ
> উপকারভোগী জনগণ ও বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে সুনির্দিষ্ট চুক্তিনামা
সামাজিক বনায়ন এর গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা:
> গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিরুদ্ধে যুদ্ধ
> মৃত্তিকা সংরক্ষণ
> জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
বায়র গুণমান উন্নত করে স্বাস্থ্য উপকারিতা
> শক্তির নিত্যতা
> সামাজিক সুবিধা
আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু বৃক্ষ পরিবেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং অন্যতম বনজ সম্পদ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গাছের বিকল্প নেই। পরিবেশের ভারসাম্য ও জলবায়ুর সমতা রক্ষার পাশাপাশি আমাদের খাদ্যের উৎস, বস্ত্র, আবাসস্থল ও লেখনী সামগ্রী তৈরির কাঁচামালের উৎস হিসেবে বৃক্ষ এর অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের বর্তমান যেকোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত কেননা প্রাকৃতিক পরিবেশকে উপেক্ষা করে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বৃক্ষহীন পরিবেশ জীবন ও জীবিকার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। তাই আমাদের বাঁচতে হলে তবুরাজির শ্যামল ছায়ায় প্রত্যাবর্তন করতে হবে। দেশের অর্থনীতি ও জনজীবনে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের প্রত্যেকের প্রতি বছর অন্তত দুটি করে বৃক্ষরোপণ করা দরকার। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করা। গাছ লাগানোর পাশাপাশি সম্পদের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি পূরণে লাগামহীন বৃক্ষনিধনও বন্ধ করতে হবে। গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছ বাঁচাতে হবে। বাড়ির আঙ্গিনায়, বাগানে, পতিত জমিতে, রাস্তার দুই পাশে, নদীর পাড়ে গাছ লাগানো যেতে পারে। বৃক্ষরোপণ অভিযান হিসেবে সাধারণত বর্ষাকালে (জুন-অগাস্ট মাস) সপ্তাহ, পক্ষ কাল বা মাসব্যাপী ফলদ, বনজ, ওষধি, দারু বৃক্ষ লাগাতে পারি। 'আসুন গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই'- এ স্লোগানে যদি আমরা সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করি ও গাছ লাগাই তাহলে আমাদের বৃক্ষসম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও সুন্দর হবে। বৃক্ষরোপণের প্রতি মনোযোগী হওয়া এখন সময়ের দাবি।
- অঙ্গজ উপায়ে উৎপাদিত এবং মাতৃগাছের গুণগতভাবে সমৃদ্ধ। উচ্চফলনশীল, রোগবালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ মুক্ত। সতেজ ও সুস্থ সবল, গাঢ় সবুজ পাতা বিশিষ্ট চারা। চারার প্রধান শিকড় অক্ষত থাকতে হবে। - মাতৃগাছের বাগান সমৃদ্ধ গবেষণা, শিক্ষা, সম্প্রসারণ প্রতিষ্ঠান কিংবা রেজিস্ট্রার্ড নার্সারি থেকে সংগ্রহকৃত। -মূল ও কাণ্ডের মধ্যকার অনুপাত ১:৩-৪ এবং চারা/কলমের বয়স কম বেশি ১ বছরের কাছাকাছি চারা সংগ্রহ করা উত্তম। খুব বেশি বয়সের চারা নির্বাচন না করা ভালো
- নিবার্চিত স্থানের মাটি দোআঁশ ও উর্বর হতে হবে। যেখানে পানি জমে না বা বন্যার পানি উঠে না এমন জায়গা বৃক্ষ রোপণের জন্য আদর্শ স্থান। চারা রোপণের জায়গা আলো বাতাস পূর্ণ ও সুনিষ্কাশিত হওয়া দরকার। বাড়তি ঘরের আশেপাশে বৃক্ষ লাগাতে চাইলে সাধারণত উত্তর পাশে বা উত্তর-পশ্চিম পাশে জায়গা নিবার্চন করা ভালো। জলাবদ্ধতা সহনশীল গাছপালার জন্য নীচু ও স্যাঁতসেতে জায়গায় গাছ লাগানো যায়। যেমন- হিজল, পিটালি, জাবুল, কদম, মান্দার প্রভৃতি। - চারা লাগানোর জায়গার অবস্থান অনুযায়ী প্রজাতি নির্বাচন করতে হবে। যেমন উঁচু জায়গার জন্য কাঁঠাল, মেহগনি, সেগুন ইত্যাদি এবং জায়গা নীচু হলে জারুল, কদম, হিজল ইত্যাদি
Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book. It has survived not only five centuries, but also the leap into electronic typesetting, remaining essentially unchanged.